শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শুনানি শুরু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ঐতিহাসিক দিন

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা



বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়েছে

🔹 তারিখ: ১ জুলাই, মঙ্গলবার
🔹 স্থান: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকা
🔹 সময়: সকাল ১০:৪৫ মিনিট


🔍 অভিযোগের প্রেক্ষাপট

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শুনানির শুরুতেই বলেন,

“২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে এই তিনজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন।”

তার বক্তব্যে শেখ হাসিনার ক্ষমতার ধরন, পরিবারের প্রভাব ও রাষ্ট্রে ‘একক নেতৃত্ব’ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়।
তিনি আরও বলেন—

“পারিবারিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে শেখ মুজিবের ছবি, জন্ম-মৃত্যু দিবস পালনকে বাধ্যতামূলক করেছেন।


🧑‍⚖️ অভিযুক্তদের অবস্থা

  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল: পলাতক

  • আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন: ট্রাইব্যুনালে সরাসরি উপস্থিত

আইনজীবী আমির হোসাইন পলাতক দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত কৌঁসুলি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি শুনানির প্রস্তুতির জন্য ১৫ দিনের সময় চাইলে, ট্রাইব্যুনাল ১ সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে।

চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন ৫টি অভিযোগ উত্থাপন করে, যার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, গুম, নির্যাতন এবং সাংবিধানিক অধিকার হরণের মতো গুরুতর অভিযোগ।





🗣 প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরক্ষা

শেখ হাসিনার পক্ষে আমির হোসাইন বলেন:

“এই মামলার পাঁচটি অভিযোগই সঠিকভাবে গঠিত হয়নি। আমি শেখ হাসিনার ডিসচার্জ (খালাস) আবেদন করব।”
“বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এরকম মামলা হয়নি, এটি একটি ঐতিহাসিক মামলা।”

অন্যদিকে, মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ অভিযোগ গঠনের এই পর্যায়ে শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে।


📺 সরাসরি সম্প্রচার

এই শুনানি **বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)**তে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, যা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় এক নতুন দৃষ্টান্ত।


⚖️ মামলার পটভূমি

  • ১ জুন: শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন

  • ১২ মে: তদন্ত সংস্থা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়

  • ৫ আগস্ট ২০২৪: রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাঠামো ও নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়

  • বর্তমান প্রসিকিউশনের অনেকেই আগে জামায়াত নেতাদের পক্ষে ছিলেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে