মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, গুরুতর আহত ২
মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুরুতরসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে আশিকুল তামিম আশিক (২৩) ও কিরোন আক্তার (২৬) নামে দুই শিক্ষার্থীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার সময় ও স্থান
এই ন্যক্কারজনক হামলা ঘটে মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৮টার দিকে, মাদারীপুর-গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী চরপ্রসন্নদী এলাকার বরিশাল গেট চাইনিজ হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে। উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জাবের বিন নূর। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে মুকসুদপুর থানা পুলিশ।
আহতদের পরিচয়
আহতদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাদারীপুর জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুল তামিম আশিক ও কিরোন আক্তার প্রধান, উভয়েই মাদারীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়া সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম এবং মিথিলা ফারজানাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পেছনের কারণ
জানা যায়, দিনব্যাপী শহীদ পরিবারের মাঝে মৌসুমি ফল (আম, কাঁঠাল, লিচু) বিতরণ শেষে নেতাকর্মীরা পাইকপাড়া থেকে মিনি ট্রাকে ফেরার সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মিজান পরিবহনের একটি বাস তাদের পিকআপটিকে চাপ দেয়।
পরবর্তীতে গাড়িটি বরিশাল গেট রেস্টুরেন্টে থামলে, নেতাকর্মীরা বাসের হেলপারের কাছে এর কারণ জানতে চান। এ সময় হেলপার গালিগালাজ শুরু করে এবং নারী সদস্যদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে। প্রতিবাদ করায় একদল কিশোর রেস্টুরেন্টের ছাদ থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।
নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া ও হুশিয়ারি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করার কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
আন্দোলনের মাদারীপুর জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব রিশাদ রাব্বি বলেন, "আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছিলাম। আমাদের কোনো সদস্যের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ছিল না। হেলপারের কটূক্তির প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার চাই।"
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান
মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

0 মন্তব্যসমূহ