রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬ নেতা পদত্যাগ, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একযোগে পদত্যাগ করেছেন ১৬ জন নেতাকর্মী।
পদত্যাগকারীদের মধ্যে মহানগর কমিটির ১১ জন এবং জেলা কমিটির ৫ জন রয়েছেন। তাদের অভিযোগ, কিছু শীর্ষ নেতা সংগঠনের নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন, যার দায় তাদের ওপরও আসছে।
পদত্যাগকারী মহানগর কমিটির নেতারা:
-
সিয়াম আহসান আয়ান (যুগ্ম সদস্যসচিব)
-
আদনান সামির
-
মাহদী হাসান অনিক
-
গোলাম আযম রাতুল
-
এনায়েত রাব্বি
-
আরাফাত সানি
-
আল শামস সিয়াম
-
আল আমিন
-
সীমান্ত হোসেন
-
মোজাহিদ
-
আল তানজীল আহসান
পদত্যাগকারী জেলা কমিটির সদস্যরা:
-
মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ
-
জুনাইদ ইসলাম সাদিদ
-
সৃজন সাহা
-
মাহতাব হোসেন আবির
-
সাওম মাহমুদ সিরাজ
তারা জানান, রোববার (১৮ মে) সন্ধ্যা ৭:৩০ টায় রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় অর্ধশতাধিক কর্মী সংগঠন ছাড়ার ঘোষণা দেন।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে:
-
চাঁদাবাজি: গ্রামীণ কুটির শিল্প মেলা থেকে ১৪ লাখ টাকা চাঁদা তোলা।
-
মামলা বাণিজ্য
-
ত্রাণ আত্মসাৎ: ফেনীর বন্যার সময় সংগৃহীত ত্রাণের ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ।
-
নিয়োগ বাণিজ্য: রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৫ জন কর্মচারীর নিয়োগে লাখ টাকার লেনদেন।
পদত্যাগী নেতা সিয়াম আহসান আয়ান বলেন, "এইসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছি। আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে এইসব কর্মকাণ্ড সাংঘর্ষিক।"
আরেক নেতা মাহতাব হোসেন আবির বলেন, "আমরা বারবার কৈফিয়ত চাইলেও নেতৃত্ব থেকে কোনো জবাব আসেনি, বরং দুর্নীতিকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে।"
নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার:
মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমদ বলেন, "আমি কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াইনি। এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।"
জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ একে "ষড়যন্ত্রমূলক" অভিযোগ আখ্যা দিয়ে বলেন, "সংগঠনকে বিতর্কিত করতেই এমন কাজ করা হচ্ছে। খুব শিগগির আমরা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেব।"
প্রেক্ষাপট:
এর আগে, ১৫ মে জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে সদস্য মাহমুদুর রহমান পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ২৪ নভেম্বর ইমতিয়াজ আহমদ ও রহমত আলীকে নিয়ে গঠিত হয় ১১২ সদস্যের মহানগর কমিটি এবং ইমরান আহমেদ ও আশফাক আহমেদ জামিলকে নিয়ে গঠিত হয় ১৫৫ সদস্যের জেলা কমিটি।
0 মন্তব্যসমূহ